ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এক মাসে রেকর্ড ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন

দেশে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রতিদিনই বাড়ছে গ্রাহক, বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। বর্তমান সময়ে এ মাধ্যম যেন এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে রেকর্ড ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, আলোচিত মাসে (এপ্রিল) এক লাখ ২৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর আগের বছরের একই সময়ে (এপ্রিল-২০২২) মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১৭ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাৎক্ষণিক টাকা লেনদেন ও পাঠানোর সুবিধার কারণে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রাম থেকে শহরে কম খরচ ও দ্রুত টাকা পাঠানো যায়। এ সেবায় যুক্ত হয়েছে লেনদেন ছাড়াও বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল পরিশোধ করা ও কেনাকাটা। একই সাথে সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, প্রবাসী আয় পাঠানো যায় এ সেবায়। এ কারণে সব ধরনে গ্রাহকই এ সেবাটি লুফে নিচ্ছেন।

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছিল ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা, আগস্টে কিছুটা কমে লেনদেন হয়েছিল ৮৭ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। পরের মাস সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় ৮৭ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা, অক্টোবর মাসে ৯৩ হাজার ১৩ কোটি টাকা, নভেম্বরে ৯২ হাজার ১২৫ কোটি এবং ডিসেম্বরে ৯৬ হাজার ১৩২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।

আর চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৬৯৩ কোটি টাকার। পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা কমে লেনদেন হয়েছিল ৯৭ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। মার্চ মাসে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেন হয় ১ লাখ ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই- এপ্রিল) মোবাইল ব্যাংকিং বেড়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৮টি। এপ্রিল শেষে মোট নিবন্ধিত হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ৬৮ লাখ ৯ হাজার ২১০টি। যেটি গত বছরের জুন শেষে ছিল ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪২টি। যদিও কোনো কোনো গ্রাহক এক বা একাধিক হিসাব খুলে লেনদেন করেন এ মাধ্যমে।

এপ্রিল শেষে পুরুষ গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৯২৫জনে, আর নারী গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ৩০২জনে। মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৭৯১টিতে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে। আলোচিত মাসে মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩৪ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ৪ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা, পরিষেবার ২ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকার বিল পরিশোধসহ কেনাকাটায় লেনদেন হয় ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর পরের বছর ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেটের মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু। এর পরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আসে বিকাশ। সেবা নিয়ে আসে নগদসহ আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান।

এএ

পাঠকের মতামত: